ভেন্যু পরিদর্শন শেষে মির্জা আব্বাস বললেন, কোনও মাঠই নিরাপদ নয়

  09-12-2022 03:15AM

পিএনএস ডেস্ক: ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে বৈঠকের পর আলোচনায় উঠা কমলাপুর স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজের মাঠ পরিদর্শন করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান উপদেষ্টা মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে এ প্রতিনিধি দল শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) প্রথম প্রহরে সম্ভাব্য সমাবেশস্থল নির্ধারণে সরেজমিনে যান।

পরে সাংবাদিকদের মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দুইটা মাঠ দেখেছি। স্থায়ী কমিটির সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানাবো। কোথাও নিরাপদ নয় বিএনপি কর্মীরা। সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।’

এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘আজকে রাতেই আমরা দুটি জায়গা পরিদর্শনে যাবো। যেটি আমাদের পছন্দ হয় সেখানেই সমাবেশ করবো।’

পাশাপাশি একই সময় সাংবাদিকদের ‘বিএনপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে ডিএমপি কমিশনারের সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে’ বলে জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, ‘সমাবেশস্থল নিয়ে যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল তা আগামীকাল (শুক্রবার) কেটে যাবে।’

আগের দিন বুধবার (৭ ডিসেম্বর) নয়া পল্টনেই হঠাৎই সংঘর্ষে জড়ায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও বিএনপির সমর্থকরা। এরপর পরস্পরবিরোধী অভিযোগের মধ্য দিয়ে পরদিন বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সারাদিন কাটে। দুপুরে নয়া পল্টনের বিএনপির কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় সিআইডি। বিকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ইঙ্গিত দেন, বিএনপি এখনও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাইলে আপত্তি নেই।

এক্ষেত্রে মিরপুরের কালশী মাঠের কথাও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। প্রায় একই সময়ে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আয়োজনে প্রতিবন্ধকতা দূর করুন।’ এরপর সন্ধ্যার দিকে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে খবর আসে, ‘একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল সমাবেশস্থল ঠিক করতে আবারও ডিএমপিতে যাবে।’ এ নিয়ে তিন বার ডিএমপির সঙ্গে আলোচনা করে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ডিএমপিতে যান। বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও বিএনপির আইন বিষয় সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাত সাড়ে ৯টায় বেরিয়ে তারা সাংবাদিকদের জানান, নতুন ভেন্যু নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ভেন্যু দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ডিএমপি থেকে সরাসরি মির্জা আব্বাসের বাসায় যান। সেখান থেকে বেরিয়ে তারা কমলাপুর স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজের মাঠ পরিদর্শন করেন। এরপর মির্জা আব্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুইটা মাঠ দেখেছি। স্থায়ী কমিটির সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানাবো। কোথাও নিরাপদ নয় বিএনপি কর্মীরা। সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। আমাদের প্রস্তুতি আছে তবে মারামারি করার প্রস্তুতি নেই।’

মাঠ নির্ধারণ নিয়ে শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির সিনিয়র কয়েকজন নেতার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তারা জানান, ভেন্যু নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না তারা। বিশেষ করে পুলিশের পক্ষ থেকে মিরপুর বাঙলা কলেজের প্রস্তাব তারা গ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখছেন না।

স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, রাতেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ভেন্যু নিয়ে মির্জা আব্বাসের মতামত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে আলোচনা হবে। এরপর সিদ্ধান্ত আসবে।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে একজন প্রভাবশালী নেতা জানান, কোনও সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর বিভাগের নতুন দায়িত্বশীল সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স জানান, ‘১০ ডিসেম্বর শনিবার গণসমাবেশের ভেন্যু নিয়ে আমি কিছু জানি না। এ নিয়ে মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বাধীন একটি দল কাজ করছে। তারা সিদ্ধান্ত জানাবেন।’

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন