‘ইউপি চেয়ারম্যান- মেম্বারকে ধরিয়ে দিলেই পুরস্কার’

  27-04-2024 02:24AM

পিএনএস ডেস্কফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেছেন, ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান তপন ও ইউপি সদস্য অজিত কুমার বিশ্বাস জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়ার শপথ করে সে শপথ ভঙ্গ করে নির্মাণ শ্রমিকদের হত্যার কাজে অংশ নিয়েছেন। ইউনিয়ন আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবে চেয়ারম্যান সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন।

ফরিদপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন জেলা প্রশাসক। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রশাসক বলেন, ওই নির্মাণ শ্রমিকদের মারপিটের সময় চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। আবার পরে তিনি ওসি, ইউএনওকে সাথে নিয়ে উদ্ধার অভিযানে যান। ওই সময়ে তার ভূমিকা ও আচরণ আমরা বুঝতে পারিনি। পরবর্তীতে কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনাস্থলে তার উপস্থিতি জানতে পারি। তার আগেই গা ঢাকা দিয়েছেন চেয়ারম্যান ও মেম্বার। তারা যাওয়ার সময় তাদের মুঠোফোনটিও বাড়িতে রেখে গেছেন, যার কারণে তাদের ট্রেস করতে সময় লাগছে। যদি কেউ চেয়ারম্যান ও মেম্বার এর তথ্য দিতে পারে তার পরিচয় গোপন রেখে তাকে পুরষ্কৃত করা হবে।

জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে বরখাস্ত করার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখা হবে। এ চেয়ারম্যান অভ্যাসগত ভাবে অপরাধী। ইতিপূর্বে মধুখালীর ইউএনওকে লাঞ্ছিত করার জন্য একবার এবং আরেকবার টিসিবির কার্ড চুরি করায় তাকে এক বার বরখাস্ত করা হয়। তবে দুই বারই তিনি হাইকোর্টের মাধ্যমে তার পদ ফিরে পান।

এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি ৭ দিন সময় চেয়েছে, তদের ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার কথা ছিল। আমরা তাদেও সময় দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কোন বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

আসামিদের আত্মসমর্পণ করে আইনগত সুবিধা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, আসামি হিসেবে যাদের নাম আমরা পেয়েছি তাদের সকলের জাতীয় আইডি কার্ড সনাক্ত করে পরিচয় উদঘাটন করা হয়েছে। এরা যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে এজন্য বিমানবন্দরের ও পোর্টগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি এদের অনেকের পাসপোর্ট নেই। এরা যাতে অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করতে না পারে এ জন্য বিজিবিকে নজরদারির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে ব্যবহার করার জন্য ফায়দা লোটার জন্য নানা মহল চেষ্টা করছে মন্তব্য করে জেলা প্রশাসক বলেন, ফেসবুকে বিভিন্ন ভুয়া আইডি খুলে বিদেশে বসে নানা রকম আপত্তিকর পোষ্ট দেওয়া হচ্ছে, এখন ফেসবুকে তা ভাসছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, ফেসবুকে আপত্তিকর কিছু দেখলেই জেলা প্রশাসনকে অবহিত করলে তার বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম আইনে মামলা করা হবে। আমাদের সকলকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে ইউটিভবারদের থেকেও।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে ডুমাইন উপজেলার হিন্দু অধ্যুসিত পঞ্চপল্লীতে একটি বিদ্যালয়ের নির্মান শ্রমিকদের পিটিয়ে ২ জনকে হত্যা করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় তারা মন্দিরের প্রতিমায় আগুন দিয়েছেন। যদিও এখনো পর্যন্ত কোন সংস্থার তদন্তেই প্রতীমায় আগুন দেয়াতে শ্রমিকদের শংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন