লাভের আশায় আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক

  18-11-2023 04:41PM

পিএনএস ডেস্ক: ভালো দাম ও বেশি লাভের আশায় দিনাজপুর সদর, খানসামা, ফুলবাড়ী, কাহারোল, বীরগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার মাঠে অনেক কৃষক আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কোন কোন স্থানে কৃষক আগাম জাতের আলু রোপন করেছেন। আবার কেউ ধান কাটার পর আলু রোপনের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন। আবার অনেকে নতুন আলু বাজারে আনতেও শুরু করেছেন ভালো দাম পাবার আশায়।

শনিবার দিনাজপুর শহরের রেলবাজার ও বাহাদুর বাজারে নতুন আলু বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায় নতুন আলু। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম জাতের ধান কেটে গ্রানুলা, স্টোরিজ, সেভেন জাতের আলুসহ মাঠের পর মাঠ বিভিন্ন জাতের আলু চাষ করছেন।

ফসলের মাঠে দেখা গেছে, দ্বিগুণ লাভের আশায় মাঠে মাঠে চলছে জমি প্রস্তুত ও আলু রোপণের কাজ। অনেকে জমি তৈরি, আগাছা পরিষ্কার ও বীজ সংগ্রহ করছেন। সরকারি, বেসরকারি ও কৃষক পর্যায় তিন স্তরেই বেড়েছে আলু বীজের দাম। এছাড়া সার, কীটনাশক, হালচাষ ও শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় আলু উৎপাদনে খরচ বাড়বে বলে জানান কৃষকরা।
আলু চাষিরা নিজেরাই প্রতিবছর বীজ সংরক্ষণ করে রাখেন। অনেকে আবার বাজার থেকে বীজ কিনে রোপণ করেন। তুলনামূলক উঁচু জমিগুলোতে আলু চাষ শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত মুনাফার আশায় অনেকে তাদের জমিতে আলু চাষ শুরু করেছেন। কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে।

কৃষকরা জানায়, গত বছর আগাম আলু উত্তোলন করে ৩০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। তারপরও যখন প্রকৃত চাষীদের হাত থেকে ব্যবসায়ীদের কাছে সেই আলুর দাম দ্বিগুণ হয়। এজন্য এবারও বেশি জমিতে ৫৫ থেকে ৬০ দিনে উত্তোলনযোগ্য সেভেন জাতের আলু রোপণ করছি।

আলু চাষি আবু তাহের বলেন, আমাদের এলাকার মাটি উঁচু এবং বালু মিশ্রিত হওয়ায় বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ না হলে আগাম আলু চাষে তেমন কোনও ভয় থাকে না। ফলনও ভালো হয়। উৎপাদিত আলু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হওয়া যায়। অন্যান্য ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাপক অবদান রাখে আগাম আলু চাষ। যার আলু যত আগে উঠবে সেই কৃষক তত ভালো দাম পাবেন। তাই সবাই লাভের আশায় আগাম জাতের আলু চাষে মাঠে কাজ করছি।
খানসামার ডাঙাপাড়া এলাকার শরিফউদ্দিন বলেন, আগাম আলুতে লাভবান বেশি হওয়া যায়। সে কারণে এবার প্রায় ২৫শতক জমিতে সেভেন জাতে আলু রোপন করেছি। এসব আলু ৫৫ থেকে ৬০দিনে আলু পাওয়া যায়।

কাহারোল উপজেলার ইটুয়া গ্রামের আলু চাষী মো. আব্দুল জলিল জানান, এবার তিনি ৩ একর জমিতে আগাম জাতের আলু আবাদ করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলুর বাম্পার ফলনও হবে বলে আশা করেন।

কৃষি বিভাগ জানায়, উচু মাটি আগাম আলু চাষের জন্য খুব উপযোগী। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাঠের পর মাঠ আগাম আলু চাষে কাজ করছেন কৃষক। আগাম জাতের আলু চাষে কৃষকদের সকল প্রকার সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।

খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার জানান, উপজেলায় চলতি বছর ২ হাজার ২৬০ হেক্টর জতিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৫ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এক হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপণের সম্ভাবনা রয়েছে।

পিএনএস/সোহান

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন