দেশের বাজারে কদর বাড়ছে ক্যাপসিকামের

  01-02-2024 12:26PM



পিএনএস ডেস্ক: দেশের বাজারে লাল, সবুজ ও হলুদ রঙের ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের এ ক্যাপসিকামের। ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় বাগেরহাটে শুরু হয়েছে ক্যাপসিকামের বাণিজ্যিক চাষ।

সালাদ হিসেবে খাবারে বাড়তি স্বাদ ও বাহার যোগ করে এ মরিচ। বিদেশি এ সবজিটির রয়েছে নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা। এ কারণে দেশের বাজারে ক্যাপসিকামের কদর বাড়ছে।

বাগেরহাটের কচুয়া ও মোল্লাহাট উপজেলার কৃষকরা অধিক মুনাফা ও বাজারে বেশি চাহিদা থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের এ ক্যাপসিকামের চাষ শুরু করছেন।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউপির কাঠালিয়া গ্রামের কৃষক এহসানুল কবির এ ক্যাপসিকামের চাষ করছেন।

তিনি বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা নিয়ে নিজের ২০ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ক্যাপসিকাম চাষ শুরু করি। ৮ মাস আগে জমি তৈরি করে রোপণ করি উচ্চ ফলনশীল ক্যাপসিকাম। যা থেকে ভালো ফলন পাচ্ছি। ২শ থেকে ৪শ গ্রাম পর্যন্ত হচ্ছে প্রতিটি ক্যাপসিকামের ওজন। প্রতিটি গাছ থেকে ৪ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত ক্যাপসিকাম পাওয়ার আশা করছি। ক্ষেত থেকে ব্যবসায়ীরা ১৫০ টাকা কেজি প্রতি ক্যাপসিকাম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

এহসানুল কবিরের বাবা বলেন, আমার ছেলেই প্রথম ক্যাপসিকামের চাষ শুরু করেছে। শুধুমাত্র খৈল ভিজানো পানি ও কিছু জৈব সার দিয়ে গাছ তৈরি করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। এক একটি ফলের সাইজ আধা কেজি পর্যন্ত হয়েছে। আশপাশের অনেকেই এখন এই মিষ্টি মরিচ চাষ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

কৃষক আলামিন শেখ বলেন, আমাদের এলাকায় এই প্রথম দেখলাম মিষ্টি মরিচ বা ক্যাপসিকামের চাষ। আমিও ক্যাপসিকামের চাষ শুরু করবো।

জানা যায়, কচুয়া উপজেলা মাটি ও আবহওয়া ক্যাপসিকাম চাষের জন্য উপযোগী। ভালো মূল্য পাওয়ায় চাষটি ছড়িয়ে দিতে পারলে আমদানি নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি কৃষকরা ব্যাপকভাবে লাভবান হবেন। কৃষক এহসানুল কবিরের ক্যাপসিকাম চাষ দেখে এলাকার কৃষকরা এ ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। আগামীতে কচুয়া উপজেলায় এ ক্যাপসিকাম চাষ বাড়বে।

মোল্লাহাট উপজেলার গারফা গ্রামের কৃষক শেখ ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ ও মোল্লাহাট কৃষি অফিসের সহায়তা নিয়ে নিজের এক একর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে গত বছর ক্যাপসিকাম চাষ শুরু করি। বেশি ফলন ও বাজারে চাহিদা থাকায় এ বছরও উচ্চ ফলনশীল ইয়েলোহট জাতের ক্যাপসিকাম রোপণ করেছি। যা থেকে ভালো ফলন পাচ্ছি। প্রতিটি গাছ থেকে ৫ থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত ক্যাপসিকাম পাওয়ার আশা করছি। ব্যবসায়ীরা ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি প্রতি ক্যাপসিকাম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

মোল্লাহাট উপজেলা কৃষি অফিসার অনিমেষ বালা বলেন, উচ্চমূল্যে ক্যাপসিকাম মোল্লাহাটে গাফরা গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা শেখ ফয়সাল আহম্মেদ পরীক্ষামূলকভাবে ক্যাপসিকামের চাষ শুরু করেছেন। তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করছি। আশা করছি, আগামীতে মোল্লাহাট উপজেলায় ক্যাপসিকামের চাষ বাড়বে।

কচুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মামুনূর রশিদ বলেন, ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদেরকে উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবে ক্যাপসিকাম এর ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ একটি জনপ্রিয় ও লাভজনক ফসল। দেশের বাজারেও ভালো দাম পাওয়া যায়।

এ উপজেলা মাটি ও আবহওয়া ক্যাপসিকাম চাষের জন্য উপযোগী। এরইমধ্যে এহসানুল কবির নামের এক কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে ক্যাপসিকামের চাষ শুরু করেছেন। আশা করছি আগামীতে কচুয়ায় আরো বড় পরিসরে ক্যাপসিকামের চাষ হবে।


পিএনএস/এমএইউ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন