‘আমার যেতে ভালো লাগছে না মা’

  01-11-2021 03:25PM

পিএনএস ডেস্ক: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) দুইপক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত মাহাদি আকিব হোসেন তনয় এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। কুমিল্লার বাড়ি থেকে চমেক হলের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার সময় আকিব তার মাকে বলেছিলেন, ‘আমার যেতে ভালো লাগছে না মা’।

আকিবের বাড়ি কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার কিং বামিশা গ্রামে। কুমিল্লা জিলা স্কুলের তুখোড় ছাত্র ছিলেন আকিব। জিলা স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি ভর্তি হন নটরডেম কলেজে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর পরীক্ষা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে। দুটোতেই উত্তীর্ণ হন।

আকিবের মামা ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেন, আকিবরা দুই ভাই। একজন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেছে। আকিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে চান্স পায়। তার বাবা কুমিল্লা জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক গোলাম ফারুক মজুমদার ছেলের সিদ্ধান্তের ওপর সব ছেড়ে দেন, কোথায় সে পড়বে। আকিব পরিবারকে জানায়, সে বড় ডাক্তার হবে, তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে না। পরিবার তার দাবি মেনে নিয়ে চমেকে ভর্তি করায়।

তিনি আরো বলেন, ও সারাদিন পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। বাবার স্বল্প আয়ে আকিবকে হলের বাহিরে রেখে পড়াশোনা করানো অসম্ভব। তাই তাকে হলে ওঠানো হয়। সে নিরীহ প্রকৃতির। তার কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই। এরপরও দুটি গ্রুপের রাজনৈতিক কোন্দলের বলি হয়েছে সে।

দেলোয়ার হোসেন বলেন, হল খোলার আগে বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে আকিব। এক সপ্তাহ আগে হলে ওঠে সে। যাওয়ার আগে মাকে জানায়- তার যেতে ভালো লাগছে না। ঐ সময় আকিবের বাবা বুঝিয়ে-শুনিয়ে তাকে চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দেয়। হলে গিয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়ে সে, কিন্ত ভয়ে বাবাকে জানায়নি।

শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত চমেকে দুই দফায় দুটি গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। আধিপত্য বিস্তারের জেরে হওয়া এ সংঘর্ষে আকিব হোসেনসহ তিনজন আহত হন। ঘটনার পরপরই অনির্দিষ্টকালের জন্য চমেক বন্ধ ঘোষণা করে কলেজের একাডেমিক কাউন্সিল। একই সঙ্গে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন