মারা গেছে বলে ফিরিয়ে দেয় হাসপাতাল, অটোরিকশায় সন্তান প্রসব

  28-09-2022 04:10PM



পিএনএস ডেস্ক : গাজীপুরের হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দিলে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সন্তান প্রসব করেছেন এক নারী।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মা ফাতেমা ও নবজাতক সুস্থ আছেন। ২০ বছর বয়সী ফাতেমা আক্তার স্বামীসহ টঙ্গীর টিএনটি বাজার এলাকায় বসবাস করেন।

স্বজনরা জানান, সোমবার বিকেল থেকে প্রসব ব্যথা শুরু হয় ফাতেমার। প্রথমে বাড়িতে ধাত্রী এনে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করা হয়। এতে ব্যর্থ হয়ে মঙ্গলবার ওই নারীকে নেওয়া হয় টঙ্গীর মাইশা জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে ডা. জাকিয়া সুলতানার তত্ত্বাবধানে আলট্রাসোনোগ্রাফি করা হলে গর্ভের শিশুর পালস মেলেনি। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে আইসিইউ সুবিধাযুক্ত হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন৷ পরে উত্তরার একটি হাসপাতালে নেওয়ার পথে সিএনজিতেই সন্তান প্রসব করেন ওই নারী।

স্বজনদের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গর্ভের বাচ্চা মারা গেছে জানার পর আইসিইউ সুবিধা আছে এমন হাসপাতালে রোগীকে ভর্তির কথা বলে। উত্তরার একটি হাসপাতালে নেওয়ার পথে সিএনজিতে নরমালি সন্তান প্রসব হয়। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।

সিএনজিচালক সোহরাব বলেন, সন্তানসম্ভবা ওই নারীকে উত্তরার একটি হাসপাতালে নেওয়ার জন্য আমার সিএনজিতে ওঠানো হয়। এ সময় সিএনজির ভেতরেই গর্ভের সন্তান প্রসব করেন ওই নারী। পরে তাকে শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সোহরাব বলেন, যতদিন আমার এই সিএনজি থাকবে ততদিন ওই শিশুর জন্য সিএনজি ভাড়া ফ্রি করে দিয়েছি আমি।

এদিকে সিএনজিতে সন্তান প্রসবের খবর পেয়ে এলাকাবাসীর মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মাইশা জেনারেল হাসপাতালে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ওমর ফারুক বলেন, বাসায় নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা কারণে সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে প্রসূতি ও গর্ভের সন্তান। হাসপাতালে আনার পর প্রথমে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করা হলে গর্ভের বাচ্চার পালস পাওয়া যায়নি।

তাই রোগীকে আইসিইউ সুবিধা আছে এমন হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে অন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথে সিএনজিতে সন্তান প্রসব করেন ওই নারী।

এ ক্ষেত্রে হাসপাতালের কোনো অবহেলা নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, দুদিন আগেও হাসপাতালটিতে চিকিৎসার অবহেলায় দেড় বছরের শিশু মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। এরপর সিএনজিতে সন্তান প্রসবের ঘটনার খবর শুনে উত্তেজিত হয় এলাকাবাসী। তাদের শান্ত করতে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। তবে এ ঘটনায় রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। তাই আপাতত হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি না করার জন্য কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পিএনএস/আলাউদ্দিন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন